Tuesday, October 13, 2015

ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন ও সেটাপ (৫ম পর্ব)


ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন ও সেটাপ (৫ম পর্ব)

প্রথমেই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে, আমার এই ৫ম পর্বটি শেষ করতে আমি অনেক বেশি সময় নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আগামী পর্বগুলো খুব তারাতারি-ই প্রকাশ করার চেষ্টা করব।
যারা আমার পূর্বের পর্বগুলো দেখেন নাই তারা এখান থেকে দেখে নিতে পারেন-
– নিস আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (রিয়েল লাইফ প্রজেক্ট)
নিস কিওয়ার্ড রিসার্চ (২য় পর্ব)
কিওয়ার্ড কম্পিটিশান অ্যানালাইসিস (৩য় পর্ব)
ডোমেইন খুঁজা ও রেজিস্ট্রেশান (৪র্থ পর্ব)
আমাদের এই ৫ম পর্বে আমরা ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন ও সেটআপ করা নিয়ে আলোচনা করেছি। তো শুরু করা যাক!
ওয়েব হোস্টিং মানে হল ভার্চুয়াল স্পেস (জায়গা) যেখানে আপনার ওয়েব সাইট বা ব্লগের লেখা, ছবি, ভিডিও থাকে। অর্থ্যাৎ ওয়েব হোস্টিং হল এমন জায়গা যেখানে আপনি আপনার ওয়েব সাইট বা ব্লগের কনটেন্ট রাখবেন। এখানে কনটেন্ট মানে শুধু লেখাই না, সাইটের সকল ছবি, ডকুমেন্ট, ভিডিও, স্কৃপ্ট, অডিও, ভিডিও ইত্যাদিকেও বুঝানো হয়েছ।
একটা কথা আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই, ডোমেইন এবং ওয়েব হোস্টিং দুইটা দুই জিনিস, কখনই দুটাকে এক ভাববেন না। ডোমেইন শুধু মাত্র নাম, আর হোস্টিং হল ডোমেইনের আওতায় সকল কনটেন্ট রাখার জায়গা।
আমার আগের পোস্টে আমি দেখিয়েছি কিভাবে ডোমেইন নির্বাচন করতে হয়, কোথা থেকে ডোমেইন কিনতে হয়, ডোমেইন নির্বাচনে বিভিন্ন বিষয় ইত্যাদি। আশা করি সবাই ডোমেইনের প্রতিটা বিষয় বুঝেছেন। এবার আমরা আমাদের ডোমেইনের জন্য একটা ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন করব।

হোস্টিং সম্পর্কিত সাধারন কিছু কথা

প্রতিটা হোস্টিং এ দুটো বিষয় থাকে: (এক) ওয়েব স্পেস (দুই) বেন্ডউইথ।
১। ওয়েব স্পেস: যেখানে আপনার ওয়েব সাইটের সকল কনটেন্ট, ইমেজ, ডক ফাইল, অডিও, ভিডিও ফাইল রাখা হয় সেই স্থানটাকে ওয়েব স্পেস বা ডিস্ক স্পেস বলে। আমাদের নিস ব্লগের জন্য প্রথম দিকে খুব একটা স্পেস লাগবে না। ১ থেকে ৩ জিবি (গিগা বাইট) স্পেস নিলেই হবে।
২। ব্যান্ডউইথ (Bandwidth): বেন্ডউইথ হল সাইটের ব্যবহারকারিরা (ভিজিটর বা ট্রাফিক) ওয়েবসাইট থেকে মাসে কি পরিমান ডাটা ডাউনলোড বা আপলোড করতে পারবে তার পরিমান। বেন্ডউইথ মাসিক ভিক্তিতে দেওয়া হয়। আমাদের নিস ব্লগের জন্য মাসে ১০-২০ গিবি বেন্ডউইথ নিলেই আপাতত চলবে।
হোস্টিং আবার বিভিন্ন কোয়ালিটির বা ধরনের হয়। যেমন শেয়ার্ড হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ডেডিকেটেড, মেনেজড, আনমেনেজড ইত্যাদি বহু প্রকারের আছে। হোস্টিং নিয়ে জানার অনেক কিছু আছে, (আমি নিজেও হোস্টিং সম্পর্কে খুব একটা ভাল জানি না)। যেহেতু এটা আমাদের নিস ব্লগ প্রজেক্ট সুতরাং আমাদের হোস্টিং সম্পর্কে এত কিছু না জানলেও চলবে।

আমাদের নিস সাইটের জন্য মিনিমাম যে রিকোয়ার্রমেন্টের হোস্টিং লাগবে:

  • শেয়ার্ড হোস্টিং (ভিপিএস হলে ভাল)
  • ওয়েব স্পেস: ১ জিবি
  • বেন্ডউইথ: ১০ জিবি (মান্থলি)
  • cPanel (হোস্টিং মেনেজমেন্ট করার জন্য)
  • ইমেইল একাউন্ট
মোটামুটি এই হল রিকোয়েরমেন্ট, আর এই রিকোয়ারমেন্টের হোস্টিং এর দাম বছরে ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা পড়বে।
আপনার যদি বাজেট ভাল থাকে তাহলে 90$-100$ ডলার (৮০০০ টাকা) খরচ করে বিদেশি কোম্পানির শেয়ার্ড হোস্টিং কিতনে পারেন। আর এই সব শেয়ার্ড হোস্টিং আপনি একাধিক নিস সাইট হোস্ট/চালাতে পারবেন।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে প্রথম দিকে দেশিয় কোম্পানির হোস্টিং ব্যবহার করেছিলাম। ভাল সাপোর্ট না পাওয়ায় পরে বিদেশি কোম্পানির হোস্টিং ব্যবহার শুরু করি। বলে রাখা ভাল, ভাল কোম্পানির হোস্টিং না নিলে সারা বছর অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। এমনকি ভাল কোম্পানির হোস্টিং না নিলে সে সাইট দিয়ে সার্চ ইঞ্জিনেও ভাল স্থান দখল করা সম্ভব নয়।

হোস্টিং নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়

১। কম দামের হোস্টিং এড়িয়ে চলুন: বাংলায় একটা প্রবাদ আছে- “যত গুড় তত মিষ্টি” সুতরাং কম দামের হোস্টিং এ সাপোর্ট কম পাবেন, বেশি দামেরটায় বেশি সাপোর্ট পাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিছুটাকা বাঁচানোর জন্য এমন মানের হোস্টিং নেওয়া উচিত হবে না যেটা আপনাকে সারা বছর ভুগাবে। ফেসবুকের কল্যানে এখন অনেকেরই স্ট্যাটাস পাওয়া যায় ১০ জিবি হোস্টিং মাত্র ৫০০ টাকায়! দয়া করে এদের এড়িয়ে যাবেন।
২। স্পেস ও বেন্ডউইথ দেখে নিন: যার কাছ থেকে হোস্টিং নিচ্ছেন তার তাছ থেকে ভাল ভাবে আপনার সার্ভারের স্পেস ও ব্যান্ডউইথ বুঝে নিন। সি-পেনেলে ঢুকে চেক করে দেখুন আসলেই কি আপনাকে আপনার কথামতন স্পেস ও ব্যান্ডউইথ দিয়েছে কিনা।
৩। কাস্টমার সাপোর্ট: হোস্টিং কেনার আগে সাপোর্টে ফোন, মেইল বা লাইভে চ্যেট করে দেখুন তারা লাইভ সাপোর্ট কেমন দেয়। সাপোর্ট পেতে দেরি হলে বা কোন গড়িমসি করলে তাদের

কোথা থেকে হোস্টিং কিনবেন?

যদি আপনার পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড, পেপাল কিংবা অন্য কোন পেমেন্ট গেট-ওয়েতে একাউন্ট থাকে তাহলে আমি বলব আপনি ইন্টারনেশনাল কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনুন। নিচে কিছু জনপ্রিয় কোম্পানির নাম দেওয়া হল যারা কিনা অল্প দামে ভাল হোস্টিং প্রভাইট করে। এদের কাছ থেকে হোস্টিং কিনলে ১ টা টপ লেভেল ডোমেইন ১ বছরের জন্য ফ্রি পাবেন। দাম ৯০ থেকে ১২০ ডলারের ভিতর পড়বে।
ইন্টারনেশনাল কোম্পানি:
  • bluehost.com
  • hostgator.com (২৫% ডিস্কাউন্ট পেতে এই কুপন কোডটি ব্যবহার করুনঃ “RealLifeProject”)
  • webhostinghub.com
  • namecheap.com (এখান থেকে একসাথে ডোমেইন ও হোস্টিং নিতে পারবেন)
যারা এখনো মাস্টার কার্ড নেন নি বা পান নাই, তারা দেশিয় অনেক কোম্পানি আছে যাদের কাছে বাংলা টাকার বিনিময়ে ডোমিন কিনতে পারবেন। এদের কাছ থেকে ডোমিন কিনতে আপনার খরচ হবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
দেশীয় কোম্পানি:

ডোমেইন হোস্টিং সেটআপ

ডোমেইন সেটআপ

ডোমেইন কেনার পর ডোমেইন কোম্পানি আপনাকে একটা প্যানেল দিবে (যাকে আমরা ডোমেইন সি-প্যানেল বা ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল বলতে পারি)। ডোমেইন প্যনেল কোম্পানি ভেদে ভিতরের ফাংশন ভিন্ন হয়। তবে মূল বিষয় গুলো কিন্তু সব প্যানেলেই থাকে।
আমরা আজ যে প্যানেল থেকে ডোমেইন সেটআপ দেখাব তার নাম হল internetbs.net। এই প্যানেল দেখতে ঠিক নিচের ছবির মতন। যেখানে আপনার কেনা ডোমেইন নামটি থাকবে।
01
এখানে থেকে আপনি আপনার ডোমেইন সিলেক্ট করুন। ডোমেইন সিলেক্ট করলে আপনি নিচের ছবির মতন একটি পেজ পাবেন।
02
এখানে আপনাকে হোস্টিং কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত ডিএনএস (DNS = Domain name server) নাম্বার বসাতে হবে। অনেকে DNS কে আরো সংক্ষেপে NS (Name Server) নামেও ডাকে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে DNS নাম্বারটা কোথায় পাব??
আপনি যখন হোস্টিং কিনবেন, তখন হোস্টিং কোম্পানিকে আপনার ডোমেইনের নামটা দিয়ে দিতে হবে। হোস্টিং কোম্পানি আপনার কাঙ্ক্ষিত স্পেস ও ব্যান্ডউইথ সহ আপনার জন্য হোস্টিং সেটআপ করে দিবে। এবং সেই হোস্টিং এর সি-প্যানেলের ইনফরমেশান আপনাকে পাঠাবে। ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে যে সব ইনফরমেশান দিবে তার একটা নমুনা চিত্র নিচে দেওয়া হল-
03
চিত্রে আমি হাইলাইট করে দেখিয়েছি NameServer1: ns1.hostglad.com ও NameServer2: ns2.hostglad.com এই NS দুইটা নাম্বার আপনাকে আপনার ডোমেইন প্যানেলে বসাতে হবে। ঠিক নিচের চিত্রের মতন-
04
NS নাম্বার বসিয়ে সেভ করে কিছু সময় অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না আপনি আপনার ডোমেইন ব্রাউজ করলে index of/ cgi-bin/ লেখাটা না আসতাছে। এই লেখাতই পেলেই বুঝবেন যে আপনার ডোমাইনে আর হোস্টিং সেটআপ সম্পন্ন হয়েছে। index of/ পেজটা দেখতে নিচের চিত্রের মতন হবে-
05
index of/ cgi-bin/
বলে রাখা ভাল – কোন কোন ক্ষেত্রে এই সেটআপ সম্পন্ন হতে ১২ ঘণ্টার মতন সময় লাগতে পারে।

ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ

ডোমেইন এবং হোস্টিং সেটআপ হয়ে গেলে আমরা এই অংশে ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ দিব। প্রথমেই বলা যাক ওয়ার্ডপ্রেস কি?
ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমান সময়ের বহুল ব্যবহৃত এবং সর্বাধিক জন্যপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্লগিং সফটওয়্যার। এটি মূলত পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দ্বারা তৈরী এবং নিয়ন্ত্রিত একটি সফটওয়্যার। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্লগটি খুব সহজেই ম্যানেজ না নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। তো শুরু করা যাক,
প্রথমেই আমাদের হোস্টিং এর সিপ্যানেলে লগইন করতে হবে। সি-প্যানেলে লগইন করার জন্য আমরা আমাদের ডোমেইনের নাম এর শেষে “/” (শ্লেষ) চিহ্ন দিয়ে cpanel লিখব। ঠিক এই রকম http://masudurrashid.com/cpanel, এইটা লিখে ব্রাউজ করলে আপনাকে হোস্টিং এর ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। হোস্টিং কোম্পানি আমাদের যে ডাটা দিয়েছিল সেখানে সি-প্যানেলের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া আছে। নিচের চিত্রে আমি সেটা হাইলাইট করে দেখিয়েছি-
06
এবার সি-প্যানেলে আপনি আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড বসান। ঠিক চিত্রের মতন।
07
ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড বসানোর পর লগইন বাটনে ক্লিক করলেই আমরা আমাদের হোস্টিং প্যানেলে প্রবেশ করব। হোস্টং প্যানেলটি দেখতে ঠিক নিচের চিত্রের মতন।
08
এর পরের অংশটি আমি ভিডিও-র মাধ্যমে দেখিয়েছি। আমি দুঃখিত যে ভিডিও-টিতে সাউন্ড কম এসেছে, তাই ভিডিও-টি দেখার সময় হেড ফোন ব্যবহার করুন। ধন্যবাদ।

ডোমেইন খুঁজা ও রেজিস্ট্রেশান (৪র্থ পর্ব)

সবাইকে স্বাগতম নিস আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর রিয়েল লাইফ প্রজেক্টে। আগের তিনটি পর্ব যারা এখনো পড়েননি তারা দেরি না করে এখানি পড়ে নিন আগের পর্ব গুলো, অন্যথায় ছন্দ পাবেন না।
– নিস আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (রিয়েল লাইফ প্রজেক্ট)
নিস কিওয়ার্ড রিসার্চ (২য় পর্ব)
কিওয়ার্ড কম্পিটিশান অ্যানালাইসিস (৩য় পর্ব)
ডোমেইন হল একটি ওয়েব সাইটের নাম/ওয়েব এড্রেস, যা দিয়ে মানুষ আপনার সাইটে আসবে বা আপনার সাইটকে খুজে বের করবে। উদাহরন- abc.com; বলে রাখা ভাল- অনেকেই ডোমেইন এবং হোস্টিং এক জিনিষ মনে করে। ডোমেইন শুধুই ওয়েব সাইটের নাম, আর হোস্টিং হল সেই ওয়েব সাইটের তথ্য রাখার স্থান।
ডোমেইন একটি ইউনিক বিষয়, একি নামে দুইজন বা তার বেশি মানুষ থাকতে পারে। কিন্তু একি নামের ডোমেইনে একাধিক ওয়েব সাইট থাকতে পারে না। তাই ভাল ডোমেইন খালি পাওয়া বেস কষ্ট সাধ্য, অনেক সময় চাহিদা অনুযায়ি ভাল ডোমেইন খালি পাওয়া যায় না।
domain-name-extensions
পৃথিবীতে অনেক রকমের ডোমেইন (ডোমেইন এক্সটেনশান) পাওয়া যায়। ডোমেইনকে তার এক্সটেনশান (.com; .net; .org; .gov; .edu etc.) দিয়ে ঐ ডোমেইনের আওতায় যে সাইট আছে তার প্রকৃতি বুঝা যায়। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ডোমেইনের এক্সটেনশান তৈরী হচ্ছে। এক এক এক্সটেনশনের ডমিনের দাম এক এক রকম। আমরা সাধারনত ডট কম (.com) ডোমেইন নিয়ে কাজ করে থাকি। ক্ষেত্র বিশেষে ডট নেট (.net) ও ডট ওআরজি (.org) নিয়েও কাজ করি।
আমাদের অ্যাফিলিয়েশনের জন্য আমরা মূলত .com, .net বা .org এই ৩টি এক্সটেনশানের যেকোন একটি এক্সটেনশানের ডোমেইন নিয়ে কাজ করব। আর এই ৩টি এক্সটেনশানের ডোমেইনের দাম সাধারনত ১০ থেকে ১৫ ডলারের হয়ে থাকে (৮০০ থেকে ১২০০ টাকা)।
বলে রাখা ভাল, ডোমেইন এবং হোস্টিং সাধারনত ১ বছরের জন্য নেওয়া হয়। বছর শেষে পুনরায় আপনাকে সেই ডোমেইন এবং হোস্টিং রিনিউ করতে হবে।

ডোমেইন নির্বাচনে বিবেচ্চ বিষয়:

১। সহজেই মনেরাখা/লিখা যায় এমন: ডোমেইন নির্বাচনে এমন ডোমেইন বাছাই করা উচিৎ যা কিনা একবার দেখলেই মনে রাখা যায়। ডোমেইনে বিদঘুটে এমন কিছু দেওয়া যাবে না যা কিনা উচ্চারন করতে মানুষের দাঁত ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম হয়। সহজ-সরল নাম নেওয়াটাই শ্রেয়।
২। অবাঞ্চিত কেরেক্টার না ব্যাবহার করা: ডোমেইনে এমন কোন ক্যারেক্টার দেওয়া উচিৎ না, যাকিনা ব্রাউজারে ডোমেইন টাইপ করার সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। উদাহরন: আপনি যদি কাউকে বলেন প্রথমআলো ডটকমে ভিজিট করতে, সে যদি প্রথমআলো ডটকম সম্পর্কে পূর্র্বে কোন ধারনা না রাখে, তাহলে সে অবশ্যই ব্রাউজারে prothomalo.com টাইপ করবে। আর সে চলে যাবে অন্য কোন আন-অথরাইজড ওয়েব সাইটে। কারন আপনি/আমি যখন তাকে বলেছি তখন তাকে “প্রথম ড্যাস(-) আলো” বলেন নি, আর তাই সে ভুল ওয়েব সাইটে চলে গেছে। সুতরাং ডোমেইনে অপ্রয়োজনীয় (-), সংখ্যা (24 বা 360) না ব্যবহার করাই ভাল।
৩। ভুল বানান পরিহার করা: অনেকেই ডোমেইনের বানানে ইচ্ছে করে বা অনিচ্ছাকৃত ভুল করে। যার দরুন সেই ডোমেইনের ব্রেন্ড ভ্যালু সঠিক বানানের ডোমেইনে অটমেটিক চলে যায়। উদাহরন: cellbazaar.com এখানে cell বানান ভুল থাকায় sellbazaar.com এ চলে যাচ্ছে। কারন কেউ সেলবাজারকে পরিচয় করিয়ে দিলে সে বলে দিবে না যে সেল বানানটা সি(C) দিয়ে। সুতরাং ডমিনে বানানের প্রতি নজর দিন।
৪। বেশি শব্দ পরিহার করা: ডোমেইনে যত কম শব্দ ব্যবহার করা যায় ততই ভাল। বেশি বর্ণ বা শব্দ না ব্যবহার করাই উত্তম। অল্প বর্ন বা শব্দ যা কিনা বলতে ও শুনতে শ্রুতি মধুর হয় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। বড় শব্দের ডোমেইন মানুষের পক্ষে মনে রাখাটা কষ্টকর। তাই শ্রুতি মধুর ছোট নাম দেওয়াটাই উত্তম।
৫। সম্ভব হলে ডট কম (.com) ডোমেইন নেওয়া: যেকোন সাইট বানানোর ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্লগিং ও অ্যাফিলিয়েশান ক্ষেত্রে ডট কম (.com) ডোমেইনের প্রধান্য দেওয়া উচিৎ। প্রয়োজনে ডোমেইনের নামে কিছু পরিবর্তন করে হলেও নেওয়া উচিৎ। পরিবর্তনটা এক এক নামের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতে পারে।
৬। রিদমিক ডোমেইন চয়েজ করা: যেহেতু ভাল ও প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ডমিন বিক্রি হয়ে গেছে, তাই আপনার ডোমেইন চয়েজ করার ক্ষেত্রে রিদমিক ব্যাপারটা মাথায় রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে দুইটি বা তিনটি শব্দ মিলিয়ে রাখতে পারেন। কিছু রিদমিক ডমিনের উধাহরন: lalgolap.com (lal এবং golap), currentworld.com (current এবং world), smartpassiveincome.com (smart, passive এবং income), earntricks.com (earn এবং tricks, devsteam.com (devs এবং team) bigganprojukti.com (biggan এবং projukti) ইত্যাদি

কোথা থেকে ডোমেইন কিনবেন?

যদি আপনার পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড, পেপাল কিংবা অন্য কোন পেমেন্ট গেট-ওয়েতে একাউন্ট থাকে তাহলে আমি বলব আপনি ইন্টারনেশনাল কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনুন। নিচে কিছু জনপ্রিয় কোম্পানির নাম দেওয়া হল যারা কিনা অল্প দামে ডোমেইন প্রভাইট করে। এদের কাছ থেকে ডোমেইন কিনতে পারবেন দাম ১০ থেকে ১২ ডলারের ভিতর।

ইন্টারনেশনাল কোম্পানি:

যারা এখনো মাস্টার কার্ড নেন নি বা পান নাই, তারা দেশিয় অনেক কোম্পানি আছে যাদের কাছে বাংলা টাকার বিনিময়ে ডোমেইন কিনতে পারবেন। এদের কাছ থেকে ডোমেইন কিনতে আপনার খরচ হবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।

দেশীয় কোম্পানি:

ডোমেইন কেনার পূর্বে লক্ষনীয় বিষয় সমূহ:

যেহেতু প্রতিটি ডোমেইন এক বছর অন্তর অন্তর রিনিউ করতে হয়। কেউ যদি রিনিউ না করে তখন নিদৃষ্ট সময় পর ডোমেইনটি অবার বেচার উপযুক্ত হয়ে যায়। তাই ডোমেইন কেনার পূর্বে একটু চেক করে নিন যে ডোমেইন টি আগে কেউ ব্যবহার করেছে কিনা? আর ব্যবহার করলেও সেকি ডোমেইনটিতে কোন স্প্যামিং করেছে কিনা। এখানে স্প্যামিং বলতে বুঝানো হচ্ছে, ডোমেইনটি কোন মিস ইউজ করা। যেমন: আগের ব্যবহারকারি সেখানে কোন হ্যেকিং, ক্রেকিং, এডাল্ট, ড্রাগ, বা অস্র। এক কথায় সাইটে অবৈধ কোন কনটেন্ট রেখেছিল কিনা সেটা চেক করা জরুরি। কারন যদি কোন সাইটে স্প্যামিং হয়ে থাকে সেই সাইট সাধারনত google থেকে সেই ডোমেইনটি penalised করা হয়ে থাকে। আর যদি কোন ডোমেইন Google Penalised করে সেটা রিকোভার করা অনেক কঠিন কাজ। তাই ডোমেইন কেনার আগে চেক করে দেখে নিন সেটি penalised কিনা। যদি ডোমেইনের পূর্বের ভার্সনে স্প্যামিং/অবৈধ কিছু পান তাহলে সেই ডোমেইন পাল্টে নতুন ডোমেইন কিনুন।
পুরাতন ডোমেইন চেক করার নিয়ম: প্রধমেই গুগলে সার্চ করুন “site:domain.com” দেখুন কোন রেজাল্ট দেখায় কিনা। যদি ডোমেইনটির পূর্বের ভার্সন গুগলে ইনডেক্স থাকে তাহলে সার্চ বারের নিচেই দেখাবে কয়টা রেজাল্ট আছে সাইটের। যদি রেজাল্ট বারে শূণ্য(০) থাকে তাহলে বুঝবেন ডোমেইনটির কোন তথ্য গুগলে নেই। তাহলে সেটিকে মুটামুটি সেফ বলা যায়। আর যদি দেখেন রেজাল্ট অনেক গুলো দেখাচ্ছে তাহলে বুঝবেন যে ডোমেইনটি আগে কেউ ব্যবহার করেছিল। যদি বুঝেন ডোমেইনটি পূর্বে ব্যবহৃত তাহলে দেখে নিন আগে মালিক কি কাজে ডোমেইনটি ব্যবহার করেছে। যদি ডোমেইনের পূর্বের ভার্সনে স্প্যামিং/অবৈধ কিছু পান তাহলে সেই ডোমেইন পাল্টে নতুন ডোমেইন কিনুন।
Google-Search

স্প্যামি ডোমেইন চেক করার নিয়ম:

এই পদ্ধতিতে জানবো আগের ডোমেইনে কি কনটেন্ট পাবলিস্ট করা হয়েছিল। এজন্য আমাদের যেতে হবে archive.org সাইটে। যেখানে আপনি আপনার ডোমেইন দিয়ে BROWSE HISTORY বাটনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত একটা টাইম কেলেন্ডার।
archive.org
যদি ডোমেইনটি আগে ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাহলে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের ভিতর কোন না কোন সালের অংশে কালো দাগ দেখাবে। যদি কালো দাগ না থাকে তাহলে নিশ্চিত হবেন ডোমেইনটি একদম ফ্রেস। আর যদি কালো দাগ দেখতে পান তাহলে সেই দাগে ক্লিক করুন।
archive.org
ক্লিক করার পর নিচে দেখবেন একটা মাসিক ভিক্তিক কেলেন্ডার চলে এসেছে। সেখানে কিছু মাসের কিছু কিছু তারিখ হালকা নিল রং এর হয়ে আছে। সেই তারিখ গুলোতে ক্লিক করলেই দেখতে পারবেন ঐ বছরের ঐ তারিখে সাইটটি দেখতে কেমন ছিল। সেখানে কি কি কনটেন্ট ছিল। আর সেই কনটেন্ট গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন ডোমেইনটির পূর্বের ভার্সন কি ভাল ছিল না খারাপ ছিল।
archive.org

ভাল ডোমেইন খুঁজার কিছু টিপ্স:

এখানে আমি আপনাদের দুইটি সাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব, যা কিনা আপনাকে ভাল ডোমেইন খুঁজতে সাহায্য করবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক-
  • impossibility.org: এই সাইটটির মাধ্যমে আপনি আপনার মেইন কিওয়ার্ডের সাথে যদিন কোন adjectives, verbs, nouns কিংবা সংখ্যা যুক্ত করে ডোমেইন খুঁজতে চান তাহলে এটি আপনাকে অনেক সহজেই সেই কাজটি করে দিবে।
  • domaintools.com/buy/domain-suggestions: এই সাইটিতে আপনি আপনার মেইন কিওয়ার্ড বা নিস দিয়ে সাজেশান চাইলে অনেক ভাল ভাল নাম সাজেস্ট করে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এই সাইটটি অনেক বেশি ব্যবহার করেছি।
কনটেন্ট অনুপ্রেরণা:
smartpassiveincome.com
searchenginejournal.com
1 2 3 5

Source: http://blog.masudurrashid.com/ 

No comments:

Post a Comment